
উচ্চরক্তচাপ পরিমাপের নিয়ম নিম্নে আলোচনা করা হলউচ্চরক্তচাপ মাপার পূর্বে বিভিন্ন বিষয় ভালোভাবে খেয়াল করতে হবে নতুবা সঠিক মাপ পাওয়া যাবেনা, যার ফলে ভুল চিকিৎসা পাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
উচ্চরক্তচাপ মাপার পূর্বে করনীয়
Table of Contents
- ৫ থেকে ১০ মিনিট রেস্ট নিতে হবে
- উচ্চরক্তচাপ মাপার আগে
চা কফি, সিগারেট ইত্যাদি ৩০ মিনিটের ভিতরে গ্রহণ না করা - প্রসাব, পায়খানার চাপ রাখা যাবেনা
ভরাপেটে বা খাওয়ার পর পর প্রেসার মাপা উচিত নয়, এটলিস্ট ৩০ মিনিট পর উচ্চরক্তচাপ মাপতে হবে। - আগেরদিন ভালো ঘুম হয়েছিল কিনা জানা জরুরি, অপর্যাপ্ত ঘুমেও উচ্চরক্তচাপ বেশি হতে পারে।
উচ্চরক্তচাপ মাপার সময় করনীয়
উচ্চরক্তচাপ পরিমাপের নিয়মে নিচের পয়েন্ট গুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ
- গ্রহনযোগ্য মেশিন ব্যবহার করা।
- বসে থাকা অবস্থায় রুটিন ব্লাড প্রেসার দেখা পাশাপাশি বৃদ্ধ ও ডায়াবেটিক রোগিদের দাঁড়ানো অবস্থাতেও ব্লাড প্রেসার দেখা যাদের অবস্থান জনিত লো-প্রেসার (Postural Hypotension) রয়েছে
- চেয়ারে হেলান দিয়ে বসতে হবে
- পা মাটিতে সমান ভাবে রাখতে হবে
- হাতে সাপোর্ট দিতে হবে
- বিপি কাফ, বিপি রিডিং মিটার হার্টের লেভেলে রাখতে হবে
- হাতের কাপড় সরাতে হবে, হাতের উপর টাইট ফিটিং কাপড় হলে সম্পুর্ন খুলে ফেলতে হবে।
- বিপি মাপার সময় কথা বলা যাবেনা
- দুই হাতেই বিপি দেখতে হবে, অনেক সময় পায়ে বিপিও দেখার প্রয়োজন হতে পারে।
- প্রতি ভিজিটে ২ বার প্রেসার দেখা উচিত।
- বিপি কমাতে হবে ২ মি.মি.মার্কারি প্রতি সেকেন্ডে।
- ২ মি.মি.মার্কারি এর নিকটবর্তী বিপি রিডিং নিতে হবে।
- যেখান থেকে সাউন্ড শুরু হবে সেটি সিসটোলিক এবং যেখান থেকে সাউন্ড বন্ধ হবে সেটি ডায়াস্টোলিক প্রেসার।
উচ্চরক্তচাপ পরিমাপের নিয়ম
উচ্চরক্তচাপ পরিমাপের নিয়ম ধাপে ধাপে এখানে বলা হবে, উপরে বর্নিত উচ্চরক্তচাপ মাপার পূর্বে ও মাপার সময় করনীয় বিষয় গুলো মানার চেষ্টা করতে হবে।
প্রেশার মাপার জন্যে রোগী আসলে, তাকে প্রথমে বসতে দিতে হবে, হেলান দিয়ে, হাত টেবিলের উপর রেখে, পা নিচে সমানভাবে ফ্লোরের সাথে রাখতে হবে। সঠিক ভাবে বসা শেষ হলে, হাতে কাপড় থাকলে খুলতে হবে, তারপর বিপি কাফ লাগাতে হবে, এলবো জয়েন্ট এর ২.৫ সে.মি. উপরে। এমন ভাবে চাপ দিতে হবে যেন ভিতরে একটি আঙুলের বেশি প্রবেশ না করানো যায়। এলবো জয়েন্ট (ভিতরের সাইডে) স্টেথোস্কোপ রেখে কানে ইয়ার পিস রাখতে হবে, তারপর প্রেশার বাড়াতে হবে, এবং ধীরে ধীরে কমাতে হবে। কমানোর সময় যখন শব্দ শুরু হবে সেটা হাই প্রেসার, যখন শব্দ বন্ধ হবে সেটা লো প্রেসার। তারপর সেটা লিখে রাখতে হবে
প্রেসার এর নরমাল রেঞ্জ
প্রেসার ১২০/৯০ মি.মি. মার্কারি এর মদ্ধে থাকা স্বাভাবিক। ১৪০/৯০ মি.মি. মার্কারি এর উপরে গেলে চিকিৎসকের( নুন্যতম এমবিবিএস ডিগ্রি সমপন্ন) পরামর্শ নিতে হবে।
আরও পড়ুন:
- জ্বর কি, কেন হয় এবং জ্বর হলে করণীয় কি?
- হাইপারটেনশন: উচ্চ রক্তচাপের লক্ষন, প্রতিরোধ, জটিলতা ও চিকিৎসা
- কোন রোগে কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাবেন – চলুন জেনে নেই ডাক্তারি ভাষায়
ব্যাতিক্রম কিছু বিষয় জানা জরুরি
ডাক্তারের কাছে গেলে প্রেসার বেশি কিন্তু বাসায় নরমাল বা কম থাকে, এটাকে মেডিকেল ভাষায় হোয়াইট কোট হাইপারটেনশন বলে
এক্ষেত্রে চিকিৎসকের( নুন্যতম এমবিবিএস ডিগ্রি সমপন্ন) পরামর্শ নিতে হবে।
ডাক্তারের কাছে গেলে প্রেসার কম কিন্তু বাসায় বেশি থাকে, এটাকে মেডিকেল ভাষায় মাস্ক হাইপারটেনশন বলে
এক্ষেত্রে চিকিৎসকের( নুন্যতম এমবিবিএস ডিগ্রি সমপন্ন) পরামর্শ নিতে হবে।
লেখক:

ডাঃ মোঃ নোমান ইসলাম নিরব
এমবিবিএস(আরপিএমসি), ডিএমইউ(আল্ট্রা), এমএসসি(নিট্রিশন – অন কোর্স)
সিনিয়র মেডিকেল অফিসার, হাইপারটেনশন রিসার্চ সেন্টার, রংপুর।
Pingback: হাইপারটেনশন: উচ্চ রক্তচাপের লক্ষন, প্রতিরোধ, জটিলতা ও চিকিৎসা — Doctors Gang