প্রি-ডায়বেটিস হলে কি করণীয়
Table of Contents
প্রি-ডায়বেটিস হলে যা করণীয় তা এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে, তার পুর্বে প্রি ডায়াবেটিস কি সেটা জানা আবশ্যক, আমি ধীরে ধীরে প্রি ডায়াবেটিস সম্পর্কে সব কিছু আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।
প্রি ডায়াবেটিস কি?
বর্ডারলাইন ডায়াবেটিস বা প্রি-ডায়াবেটিস হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে রক্তে শর্করা(গ্লুকোজ) এর মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে, তবে ডায়াবেটিস নির্ণয়ের জন্য যথেষ্ট নয়। এটি টাইপ ২ ডায়াবেটিসের প্রাথমিক ধাপ হিসেবে বিবেচিত হয় এবং সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে তা ডায়াবেটিসে রূপ নিতে পারে। প্রি-ডায়াবেটিস সাধারণত কোনো নির্দিষ্ট লক্ষণ প্রকাশ না করলেও রক্তের শর্করার স্তর পরীক্ষা করার মাধ্যমে এটি নির্ণয় করা যায়।
প্রি-ডায়াবেটিস বুঝবেন যেভাবে
ডায়বেটিস রোগীদের মত লক্ষণ থাকতেও পারে আবার নাও থাকতে পারে, যাদের ওজন বেশি তারা অনেক ঝুঁকিতে থাকে, নিয়মিত রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে বুঝতে পারবেন আপনার প্রিডায়াবেটিস রয়েছে কি না। সেক্ষেত্রে প্রতি বছরে অন্তত ১ বার OGTT পরীক্ষা করে দেখবেন।

রিপোর্টে দেখে প্রি ডায়াবেটিস বুঝবেন যেভাবে
টেস্টের নাম | প্রি-ডায়াবেটিস | ডায়াবেটিস |
খালি পেটে | ৬.১ – ৬.৯ (WHO) অথবা ৫.৬ – ৬.৯ (ADA) | ৭.০ এর বেশি |
2HABF (খাওয়ার ২ ঘন্টা পর) | ৭.৮ – ১১.০০ | ১১.০০ এর বেশি |
HBA1C (তিন মাসের গড় ডায়বেটিস পরীক্ষা) | ৫.৭-৬.৪%(ADA) অথবা ৬.০-৬.৪%(NICE) | ৬.৫% এর বেশি |
WHO-World Health Organisation, NICE– National institute for health and care excellence, ADA– American Diabetes Association ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান ডায়বেটিস এর চিকিৎসার মানদণ্ড নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
প্রি-ডায়াবেটিসের ঝুঁকি যাদের বেশি :
- অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা
- অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস ও শারীরিক ব্যায়ামের অভাব
- পরিবারে কারো ডায়াবেটিস থাকা
- উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন ও কোলেস্টেরলের সমস্যা
- বয়স ৪৫ বছরের বেশি হলে
- গর্ভকালীন ডায়াবেটিস (যে নারীদের গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হয়েছিল)
প্রি-ডায়াবেটিসের লক্ষণ:
- প্রি-ডায়াবেটিস সাধারণত কোনো দৃশ্যমান লক্ষণ প্রকাশ করে না। তবে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে, যেমন:
- অতিরিক্ত তৃষ্ণা লাগা
- ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
- অতিরিক্ত ক্লান্তি
- ওজন হ্রাস (কারণ না থাকা সত্ত্বেও)
প্রি-ডায়াবেটিস প্রতিরোধের উপায়:
প্রি-ডায়াবেটিসের অবস্থা থেকে ডায়াবেটিসে রূপান্তরিত হওয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব জীবনযাপনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের মাধ্যমে পরিবর্তন গুলো নিম্নে আলোচনা করা হল :
- স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, বিশেষ করে আঁশযুক্ত শাকসবজি, পূর্ণ শস্য, ও কম চর্বিযুক্ত প্রোটিন।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা: ওজন কমানোর মাধ্যমে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব।
- নিয়মিত ব্যায়াম: সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি মাত্রার শারীরিক ব্যায়াম করা উচিত, যেমন হাঁটা, সাঁতার কাটা, বা সাইক্লিং।
- রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ: প্রি-ডায়াবেটিসের অবস্থা হলে নিয়মিত রক্তে শর্করা পরীক্ষা করা উচিত।
- স্ট্রেস কমানো এবং পর্যাপ্ত ঘুম: পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ রাখা প্রি-ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়ক।
প্রি-ডায়াবেটিসের চিকিৎসা
- প্রি-ডায়াবেটিসের চিকিৎসা সাধারণত জীবনযাত্রার পরিবর্তনের ওপর নির্ভরশীল। তবে কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তার ওষুধ প্রয়োগ করতে পারেন, যেমন মেটফরমিন, যা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
- চিকিৎসক এর পরামর্শ নিন, পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন। ঔষধ বা পথ্য যেকোন কিছু শুরুর পুর্বে একজন রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
প্রি-ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ নিলে ডায়াবেটিসে রূপান্তর হওয়া রোধ করা সম্ভব।