plab part 1 experience

প্ল্যাব পার্ট 2 : প্রিপারেশন, ভিসা, একাডেমি, অনলাইন কোর্স, পরীক্ষা ইত্যাদি

প্ল্যাব 2 নিয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতা ও টিপস শেয়ার করেছেন ডাঃ মোহাম্মদ সাদউদ্দীন সজল

plab part 1 experience
ডাঃ মোহাম্মদ সাদউদ্দীন সজলের ছবি

লেখকমোহাম্মদ সাদউদ্দীন সজল, রেসিডেন্সিয়াল মেডিকেল অফিসার, কার্ডিয়াক আইসিইউ, ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতাল, ধানমণ্ডি।

আলহামদুলিল্লাহ, প্লাব ২ পাস! হাজার খানেক সমস্যার পরও আল্লাহ নিজ হাতে ধরে পাস করাই দিসেন নইলে এই যাত্রা পার হওয়া কঠিন ছিল। আমার সহধর্মিণী Nowshin Rumman Mahee প্রথম থেকে শেষ পরযন্ত মানসিক, ফাইনান্সিয়াল সমস্ত সাপোর্ট দিয়েছে নইলে আজকে পাস করা হত না। এই গ্রুপ টাকে অনেক ধন্যবাদ, শুরু থেকে শেষ অনেকে অনেক ভাবে উপকার করেছেন, দোয়া করেছেন, অনেক পোস্ট পরে উপকার পেয়েছি, সেটার জন্যই আজ পাস করা সম্ভবপর হয়েছে। দিনের পাস নাম্বার
১০৬, আমার নাম্বার-১১৯, টেনে টুনে ১০/১৬ স্টেশন।

আমি খুব ছোট করে আমার প্রিপারেশন এবং কিছু টিপস বলতে চাই জানিনা কার কোন উপকারে আসে কিনা। প্লাব ১ এর ব্যাপারে আমি আগে একটা পোস্ট করেছি সেটার লিংক শেষে দিয়ে দিব। তবে যা বলব একান্ত নিজের মতামত দিব, অনেকের সাথে নাও মিলতে পারে, ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন আপনার সাথে না মিললে।

প্ল্যাব বিষয়ক তথ্য কোথায় পাবেন?

প্লাব এর ব্যাপারে আদ্যোপান্ত Road to UK তে দেয়া আছে, ভিসা থেকে শুরু করে, কি করব, কি খাব, কোথায় থাকব, কিভাবে যাতায়াত করব এভ্রিথিং, সেগুলো নিয়ে বেশি কথা না বলি।

ভিসা

আমার পরিক্ষা ছিলো ৯ মার্চ, চিন্তা ছিল জানুয়ারির মাঝামাঝি ইউকে আসার, ভিসা এপ্লিকেশন ফ্লাইট বুকিং ওভাবেই করে রেখেছিলাম। কিন্তু UKVI ৬০ দিন পর জানালো ওরা নাকি আমার প্লাব ২ বুকিং কনফারমেশন ই নাকি পায় নি!! অথচ সেটা আমি নিজেই আপ্লোড করেছি, ওরা GMC তে যোগাযোগ ও করার মনে করেনি! প্রথম বার ভিসা না পাওয়ার পর চিন্তা করছিলাম পরিক্ষা পিছিয়ে দিব কি না কিন্তু সাহস করে আবার ভিসা এপ্লাই করলাম ১০ দিনের মাথায়, কোন চেইঞ্জ না করেই অনেকটা। ৫০ দিন পর ভিসা পেলাম তখন হাতে আছে ১৫ দিনের মত এক্সাম এর আগে! ভিসা রিলেটেড খুব বেশি কিছু বলতে চাচ্ছি না, ভিসার ব্যাপারে অনেক ভালো পোস্ট এই গ্রুপেই আছে, অনেক উপকার পেয়েছি অনেকের কাছে। অত চিন্তা না করে কি হবে দেখা যাবে মনে করে ২৩ ফেব্রুয়ারি প্লেনে উঠলাম, হাতে সময় ১৩ দিন। কেন যে ফেব্রুয়ারিতে ৩১ দিন হলনা!!

প্রিপারেশনের সময়কাল

যারা আমার সাথে প্রথম থেকে ছিল তারা জানে আমার প্রিপারেশন কিরকম ছিল, আমার প্রথম বার ভিসা না পাওয়ার পর এক বন্ধুর সাথে কথা বলে রেখেছিলাম যে চেইঞ্জ করে আমি এপ্রিলে পরীক্ষা দিব আর ও মার্চে পরীক্ষা দেবে। ভাগ্যবশত ও একটা সিট আগেই পেয়ে যায় সেজন্য আমি আর পরিবর্তন করতে পারলাম না। এজন্যই ভাঙ্গাচুরা একটা অবস্থা নিয়েই পরীক্ষার জন্য রেডি হলাম। সবমিলিয়ে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমি সময় পেয়েছি ২০ থেকে ২৫ দিন সর্বোচ্চ, বিশ্বাস অবিশ্বাস আপনাদের একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে আমি কাউকে এত কম সময়ে পরীক্ষা দেয়ার জন্য উৎসাহ দেবো না। কমপক্ষে দুই মাস সময় রাখতে হবে হাতে, একাডেমি করার পরে দেড় মাসের কাছাকাছি রাখতে হবে প্রিপারেশন এর জন্য প্র্যাকটিসের জন্য। কেউ যদি দেশ থেকে দেরি করে আসে তবে তাকে অবশ্যই উপদেশ দেবো পুরো নোটস একবার শেষ করে আসার জন্য। এখানে এসে পরিবেশের সাথে, খাবারের সাথে তাল মেলাতে মেলাতে ৭ থেকে ১০ দিন চলে যায়, তাই দেশ থেকে সব একবার কমপক্ষে দেখে আসার চেষ্টা করবেন।

একাডেমি

একাডেমি নিয়ে পজিটিভ ও নেগেটিভ অনেক মতামত রয়েছে। কোন একাডেমি করব,একাডেমির দরকার আছে কিনা অনেক ধরনের প্রশ্ন থাকতে পারে। একাডেমিতে না গেলেও পাস করা সম্ভব এবং দিনশেষে সবগুলো একাডেমি ই কাছাকাছি রকমের। নিজের প্রিপারেশন টা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, একাডেমি আপনাকে গাইডলাইন দিবে, একটা পরিবেশ তৈরি করে দিবে, তার কারনে প্রাক্টিস করার মানুষ পাবেন, এতটুকুই।

আমি Aspire এর ফুল কোর্স নিয়েছিলাম এবং Mo Sobhy র অনলাইন কোর্স নিয়েছিলাম। যদিও সময় এর কারনে Aspire এর কোর্স এর ২-৩ টা ক্লাস করতে পেরেছিলাম মাত্র, অনলাইন ক্লাস গুলো দেখিনি যেটা আমার বোকামি। Aspire এর ক্লাস গুলো মোটামুটি, তবে ওদের নোটস টা বেস্ট, এব্যাপারে কারো কোন সন্দেহ নেই, এক্সামিনেশন প্রসিডিউর Ankur Garg এর Youtube এ খুব ভাল করে দেয়া আছে, একাডেমি তে প্রাক্টিস করার ও ভালো সুযোগ, তবে মক গুলো এভারেজ, ওল্ডহাম এ থাকা খাওয়ার খরচ একটু বেশি মনে হয়েছে। ক্লাশ রুমে সরাসরি ডায়াস এ উঠে প্রাক্টিস করা যায় যেটা স্টেজ এর ভয় কমায়, কনফিডেন্স বাড়ায় অনেকগুন।
Mo Sobhy স্ট্রাকচারের দিক দিয়ে বেস্ট, ওর Ethics, Counselling, History এই গুলো এত সুন্দর ভাবে পেশেন্ট অরিয়েন্টেড আমার কাছে খুব ই ভালো লেগেছে, অনলাইন কোর্সেই এরাউন্ড ২৫০ পাউন্ডে কোর্স পাওয়া যায় বলে এটা নিয়েছিলাম। অফলাইনে শুধু প্রসিডিউর, এক্সামিনেশন, সিম্মান, প্রেসক্রিপশন এই ক্লাস গুলো হয়, সেটা মেবি আলাদা ২০০ পাউন্ড, আমি পরিক্ষার পর লিভারপুলে ওর একাডেমি তে গিয়েছি এমনিই, ক্লাস গুলো মোটামুটি, ওদের ম্যানিকিন,সিম্মান গুলো Aspire এর মত উন্নত না, তবে ওরা নতুন আনার চেষ্টা করছে। একাডেমি খুব বড় না, তবে ওদের অসাধারণ জিনিস হচ্ছে “গালাবা মক”। এক বসায় ১৫-২০ জন নতুন মানুষের সাথে ১৫-২০ স্টেশন করা, এটা মাস্টারপ্লান। ওদের মক গুলোও শুনেছি বেশ ভালো, আলাদা করে ৮০ পাউন্ড দিলে যে কেউ ই দিতে পারবে এখন। Mo Sobhy খুব ই অনলাইন প্রচারনার বিশ্বাসী, তাই ওর হাইপ অনেক বেশি এখন। তবে আরেকটু এক্সাম ওরিয়েন্টেড ক্লাস এবং ওর নোটস গুলো আরেকটু ম্যানেজমেন্ট ব্যাসিসে হওয়া দরকার।
Samson করিনি বলে বলতে পারছি না ওদের ব্যাপারে, তবে ওদের Mock বেস্ট, ওখান থেকে সরাসরি এক্সাম এ কমন পরে এমন কথাও শুনেছি, পরিক্ষার আগে Mr. samson নিজে একটা MasterClass নেয়, ওখানে একদিনে সব আলোচনা করে, আফসোস সব একাডেমি যদি এভাবে করত! তবে ওদের ক্লাস আর নোটস শুনেছি এভারেজ, অন্য কেউ ভাল বলতে পারবে।

Common Station, Swammy র ব্যাপারে বলতে পারছি না, তবে অনেকেই বলে এরা আউটডেটেড, আমার আইডিয়া নাই।

অনলাইন কোর্স

অনলাইন কোর্স এর ব্যাপারে যদি বলি আমাদের দেশি Zibran ভাই এর টা শুনেছি ভাল, তবে নিজে একবার পরে তারপর ওই কোর্স করলে ভাল উপকার পাবেন। ওনার Simman কোর্স করেছিলাম একদিনের, ভালই লেগেছে। ওনার মক টাও বেশ ভাল। Rabia Nur এর অনলাইন কোর্স শুনেছি বেশ ভাল, করার সুযোগ হয়নি। এছাড়া মক এর ব্যাপারে Al Mady, Bose, Lianne, Lamia Apu এদের নাম শুনেছি। দেয়ার সুযোগ হয়নি।

প্রিপারেশন কিভাবে নেয়া যায়

আমি কিভাবে নিয়েছি তার আগে বলি কিভাবে প্রিপারেশন নেয়া উচিত, প্রথমত যেকোন একটা একাডেমির নোটস কে মেইন ধরে আগাতে হবে, এখন অনলাইনে ক্লাস গুলো করা যায়। মোটামুটি প্লাব-২ এর ব্যাপারে হাল্কা ইন্ট্রো জেনে, মারক ডিস্ট্রিবিউশন জেনে পড়া শুরু করে দিতে হবে, ২ মাস সময় কমপক্ষে। একটা টপিক ভিডিও দেখে, নোটস এর সাথে মিলাতে পারলে উপকার হবে, সাথে Aspire এর নোটস থেকে ওই টপিক দেখতে পারলে বেস্ট। ২-৩ টা স্টেশন যাই পরেন, প্রাক্টিস শুরু করতে হবে, পারলে বিদেশি কারো সাথে। কমিউনিকেশন স্কিলের জন্য বিদেশিদের সাথে প্রাক্টিসের থেকে বড় উপায় আর নেই, যতই দেশি বন্ধু থাকুক, বিদেশি মানুষের সাথে কথা বলার ট্রাই করুন। পুরো ভিডিও এবং নোটস শেষ হলে সারা দিন প্রাক্টিস এবং কম সময় রিভিশন এভাবে করলে ভাল হবে বলে আমার ধারনা। এছাড়া GP Practice এর কিছু ভালো বই আছে, CSA এক্সাম এর অনেক ভালো ভিডিও আছে, Aman Aurora র অডিওবুক খুব ই ভালো IPS এর জন্য, Geely Medics ভাল এক্সামিনেশন প্রসিডিওর এর জন্য, আমি কোন টাই করতে পারিনি। ট্রাডিশনাল একাডেমি নোটস থেকে বের হয়ে অনলাইন ম্যাটেরিয়ালস গুলো ও জরুরি আমি মনে করি। এবং অবশ্যই অবশ্যই NHS ওয়েবসাইট!!

আমার প্রিপারেশন এর ব্যাপারে বলি, আমি Mo Sobhy র ভিডিও গুলো 1.5-2xএক্স স্পিড এ দেখেছি কারন সময় কম ছিল, ওর নোটস গুলো প্রিন্ট আউট করে নিয়েছিলাম, আর নোটস গুলো দাগাতাম ওর ভিডিও দেখার সময়, কারন সব কথা নোটস এর জানতে হবে এমন না, এক্সট্রা কিছু বল্লেও লিখে রাখতাম। NHS ওয়েবসাইট একটা দুনিয়া- ওরা যা টপিক্স আছে সব ওখানে দেয়া আছে, খুব সহজ ইংলিশ এ। আপনার পেশেন্টকে কথা বলতে হবে সহজ ভাষায়, মেডিকেল Jargon বাদ দিয়ে, NHS ওয়েবসাইট একটা MUST প্লাব-২ এর জন্য, যে টপিক্স পড়বেন NHS ওয়েবসাইট থেকে মিলিয়ে নিবেন, এক্সট্রা কিছু থাকলে টুকে নিবেন খাতায় বা নোটস এ। আমি কিছু দিন করতে পেরেছিলাম এটা, অনেক উপকারি। আমি প্রাক্টিস করার খুব এক্টা সুযোগ পাইনি, কারন আমি নোটস ই শেষ করতে পারছিলাম না, আমার প্রথমদিকে এক Indian রুম মেট ছিল, ওর সাথে কিছু প্রাক্টিস করেছি, এবং শেষের দিকে বাংলাদেশি কয়েকজন ভাল মানুষ পেয়েছিলাম Sameer’s Accommodation এ এসে,ওনারা আমাকে হেল্প করেছে অনেক। শেষ দিনে এসেও আমি ১-২ টা টপিক্স একবার এর জন্যে পড়তে পারিনি, এবং পরিক্ষায় ওই ২ টা থেকেই স্টেশন পেয়েছি!! Aspire এর নোটস খুলার সময় ই পাইনি, তাই Management এ অনেক দুরবল ছিলাম। সবাইকে বলব Aspire নোটস মাস্ট! এক্সামিনেশন প্রসিডিউর ৪-৫ দিন করলেই হয়ে যায়, সিম্মান ২-৩ বার দেখতে পারলে ভালো। যাই হোক এমন প্রিপারেশন নিয়ে যতটুক এক্সাম দিয়েছি আলহামদুলিল্লাহ।

এক্সামঃ

এক্সাম একেক জনের কাছে একেক রকম, আমার হারানোর কিছু ছিল না, তাই স্ট্রেসড কম ছিলাম। নোটস খুব ভাল দেখা ছিল না, তাই ওরা বুজেছে আমি কোন একাডেমি ফলো করছি না, সেটাই আমার হেল্প করেছে। সব এক্সামিনার ভাল হবে এমন না, আর দিন শেষে আপনি পেশেন্ট এর জন্য করছেন না আপনার নোটস বলে উদ্দ্বার করতে আসছেন ওরা বুঝতে পারে। একটা স্বাভাবিক পেশেন্ট কে কিভাবে ডিল করেন ওভাবেই করেন পরিক্ষা না মনে করে। সবগুলো স্টেশন ই আপনি যে একাডেমি ফলো করেন না কেন সেই নোটস গুলোয় থাকবে কোন সন্দেহ নাই, ২-১ টা ছোট ব্যাপার মাঝে মাঝে চেইঞ্জ করে স্টেশন কিছুটা চেইঞ্জ করে বাজিয়ে দেখবে যে আপনি ফ্লেক্সিবল কিনা। প্রতিটা স্টেশন নিয়ে আলাদা করে বলা যাইত বাট GMC র কারনে বলতে পারছি না। এবং পরিক্ষা দিয়ে এসে আসলে বুঝা কঠিন পাস হবে কি না, হয় চিল করেন বাট কনফিউজড থাকলে প্রাক্টিস টাচে থাকা ভাল।

আমার পরিক্ষা প্রিপারেশনের চেয়ে ভাল ছিল, কিন্তু কিছু স্টেশন এ পুরো ম্যাসাকার করে ফেলসিলাম, বুঝেছিলাম এইগুলো পাশ করা কঠিন, বাট তার বাদে বাকি স্টেশন দিয়ে পাশ হয়ে গেসে আল্লাহর রহমতে। তাই পরিক্ষা এভারেজ বা কিছুটা খারাপ হলেও আশাহত হইয়েন না, আল্লাহ চাইলে অনেক কিছুই সম্ভব। যদি মনে করেন পরিক্ষা খুব খারাপ হইসে ২-৩ দিন ঘুরে এসে প্রাক্টিসের মধ্যে থাকেন। আমি বাস্তবত পরিক্ষার আগের থেকে পরিক্ষার পরে বেশি প্রাক্টিস করেছি।

নিচের মতামত গুলো একান্ত ডাঃ মোহাম্মদ সাদউদ্দিন ভাইয়ের একান্ত ব্যক্তিগত মতামত। কারো সাথে না মিললে নিজ গুনে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

নোমান ইসলাম নিরব, সিইও, ডক্টরস গ্যাং

প্ল্যাব পাশ করার জন্যে কার্যকরী টিপস

কিছু ব্যাপার বলি যেটা অনেকের উপকারে আসতে পারে।
১) নিজের প্রিপারেশন এর সাথে অন্য কাউকে কখনই তুলনা করবেন না, ফ্রাস্টেশন ছাড়া অন্য কিছুই পাবেন না।
২) প্রাক্টিস মাস্ট, যেই টপিক্স পড়বেন, পার্টনার এর সাথে প্রাক্টিস করে ফেলবেন, ছোট করে নোটস করতে পারেন অথবা আপনার প্রিন্টেড নোটস থাকলে সেখানে লিখে রাখতে পারেন এক্সট্রা ইনফরমেশন।
৩) টাইম ম্যানেজমেন্ট ইস দা কি! প্রথমে সময় বেশি লাগবে, আস্তে আস্তে হিস্ট্রি কম করে কিভাবে ৮ মিনিটে শেষ করা যায় সেটা শিখতে হবে, সেটা প্রাক্টিসের সাথে সাথে হবে।
৪) আমরা বাংলাদেশিরা একটু পেশেন্ট ওরিয়েন্টেড ম্যানেজমেন্টে দুর্বল, আমরা থিওরি অনেক ভাল জানি, কিন্তু এটা থিওরির পরিক্ষা না। একটা কেইস আসলে তাকে কঠিন চিকিৎসা + সার্জারী সব দিয়ে দেই কিন্তু ব্যাথা আর জ্বরের ওষুধ ভুলে যাই। এখানে মনে রাখতে হবে আমরা ছোট ডাক্তার, আমাদের কাজ সিম্পটোমেটিক ম্যানেজমেন্ট, সেটা ভুলে স্পেশালিষ্ট ম্যানেজমেন্ট দিতে গেলে সমস্যা। সেটার জন্য কন্সাল্টেন্ট আছে। চিকিৎসা সব জানতে হবে এমন ও না, তবে নন মেডিকেল ম্যানেজমেন্টের ব্যাপারে এরা অনেক বেশি জোর দেয়।
৫) ম্যানেজমেন্ট এর জন্য টাইম রাখতে হবে, ৭ মিনিটের মধ্যে শেষ করার প্রাক্টিস করতে হবে আস্তে আস্তে।
৬) ICE, Safety Netting, Red Flags, Flaws মাস্ট, এগুলো পড়া শুরু করলে বুঝতে পারবেন। পেশেন্ট কি চাচ্ছে সেটা ইম্পরট্যান্ট, আপনি কি জানেন সেটা ইম্পরট্যান্ট না। আপনার জ্ঞান জানাতে গিয়ে পেশেন্ট কি জানতে চায় তা না বললে সমস্যা।
৭) এরা চায় আপনি স্ক্রিপ্টেড না হয়ে আপনার ওয়ে তে বলেন, ফ্লেক্সিবল হন। এ-জেড একাডেমি নোটস না বলার চেয়ে নিজে কিছু বলেন, সিম্পেথি, ইম্পেথি বেশি ইম্পর্ট্যান্ট। যা বলেন ফিল করে বলেন, রোবোটিক মনোটোনাস না হন। সেইফ ডক্টর হওয়ার চেষ্টা করেন এগুলোই।
৮) কম্বাইন্ড, প্রসিডিউর এগুলোয় কম হিস্ট্রি নিতে হবে, নাইলে স্টেশন শেষ করা যায় না।
৯) খুব ফাস্ট বলার চাইতে পেশেন্ট বুঝতেছে কিনা এরকম করে স্পিডে বলা ভাল। মাঝে মাঝেই জিজ্ঞেস করতে হবে পেশেন্ট বুঝতেছে কিনা, রাজি আছে কি না।
১০) দিন শেষে আপনি সব জানবেন না এটাই স্বাভাবিক, না জানলে আমি জানি না, আমি আমার সিনিয়র এর সাথে কথা বলে জেনে জানাব এতটুক সত্য বললেই এনাফ চাপা মারার চেয়ে। এরা অনেস্টি পছন্দ করে, কোন মেডিসিন সম্পর্কে না জানলে বই দেখে (BNF) জানাবেন, তাও মিথ্যা তথ্য দিবেন না।
১১) আপনি যতই পড়াশুনা করে যান, পরিক্ষা এবং এর পরিবেশ পুরোপুরি আলাদা। নিজেকে ঠান্ডা রেখে, কনফিডেন্স শো করে এপ্রোচ করতে হবে, ব্রেকিং ব্যাড নিউজ ছাড়া সব গুলোয় হাসি রাখতে হবে মুখে, কুল থাকার ট্রাই করতে হবে, আস্তে আস্তে নিজের ভাষায় কথা বলে আসতে হবে। ওরা চায় আপনি আপনার মত কথা বলেন, কথার ট্রেন চালাবেন না।
১২) এক স্টেশন দিয়ে সেটা ভুলে যান, নইলে পরের টার উপর ইফেক্ট পরবে, রেস্ট স্টেশনে বসে GMC র দামি বিস্কিট খান, নিজেকে ঠান্ডা করেন, সবাই মনে করে ২.৩০ ঘন্টা কিভাবে পরিক্ষা দিব! বিশ্বাস করেন সময় কোথা দিয়ে চলে যাবে বুঝতেই পারবেন না।
১৩) অনেক পড়া শুনা করছেন, মাঝে মাঝে একটু রিলাক্স থাকা, ব্রেক নেয়া অনেক দরকার, নিজের উপর এতটুক রহম কইরেন।
১৪) বি রেস্পেক্টফুল টু আদারস, কাউকে নিয়ে হাসি তামাশা, মকিং, ব্যাক স্টেবিং এগুলো আল্টিমেটলি আপ্নাকেই বিপদে ফেলবে, বি জেনুইন, বি হেল্পফুল।

সব কথা এখন মাথায় ও আসতেছে না, তবে কেউ হেল্প লাগলে জানাবেন, যথাসাধ্য জানানোর চেষ্টা করব। অনেকের হাতেই সময় কম, অনেকেই পরিক্ষার খুব কম সময় আগেই আস্তেছেন এখানে। তবে যার হাতে যে সময় আছে সেটা নিয়েই চেষ্টা করেন, একটু ভাগ্য সাথে থাকলে হয়ে যেতেই পারে! যারা ফ্রাস্টেশনে আছেন শেষ হবে কি না, শেষ করে ফ্রাস্টেশনে আছেন কিছু মনে নাই, কিছু পারি না- এগুলো একদম স্বাভাবিক। সবাই এই অবস্থার মধ্যে দিয়ে গেসে এবং সবাই ই যাবে, ওয়ান স্টেপ এট এ টাইম। সাথে সাথে মুসলিম হলে নামাজ, অন্যান্য ধর্মের মানুষ নিজের উপাসনা, বাবা মায়ের দোয়া এগুলো অনেক দরকারি।

সত্যি বলতে একটা একটা ধাপ করতে করতে এইটা বুঝতে পারছি যে প্রতিটা ধাপ সেই সময়ের জন্য কঠিন, চ্যালেঞ্জিং! OET, প্লাব ১, এপিক, ভিসা, প্লাব ২, কোনটাই হাতের মোয়া না, তবে লেগে থাকলে আসলে সব সম্ভব। হয়ত ধাক্কা আসতে পারে, ১ বারে না হতে পারে, কিন্তু লেগে থাকলে হবেই! আমার ভিসা ২ বার লেগেছে, কিন্তু আল্লাহ অন্য দিক দিয়ে পুষিয়ে দিয়েছে। ১ বার ধাক্কা খেলে বুঝবেন এটা একটা পরিক্ষা, অন্য দিক থেকে ঠিকই আল্লাহ আপনাকে দিবে, ধৈর্য ধরেন, আজ না হলে কাল হবে। এই রাস্তায় যা টাকা যাচ্ছে সব ইনভেস্টমেন্ট, চাকরি হয়ে গেলে সব টাকা উঠে আসবে, লাভ সহ। আর বাংলাদেশী কেউ আপনার সাথে দেখা পাইলে একটু খোজ খবর নিয়েন, এই দেশে সবাই বড় এতিম, একটু দেশী মানুষ দেখলেও ভাল লাগে! সবাই দোয়া করেন আমার জন্য! ফি আমানিল্লাহ!!

আমার আগের পোস্ট প্ল্যাব পার্ট 1 (PLAB Part 1 Preparation)

Leave a Comment