মেয়েদের যোনিতে চুলকানি হলে করণীয়

ভালো ডাক্তার চেনার উপায়

ভালো ডাক্তার চেনার উপায় নিয়ে বলেছেন : ডাঃ মোঃ নোমান ইসলাম নিরব

ভালো ডাক্তার চেনার উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা - ডাঃ মোঃ নোমান ইসলাম নিরব, এমবিবিএস
ডাঃ মোঃ নোমান ইসলাম নিরব, এমবিবিএস

ভালো ডাক্তার চেনার উপায় নিয়ে আজকের এই ব্লগটি।

সত্যিকার অর্থে ভালো ডাক্তার খুজে পাওয়ার সঠিক কোন স্কেল নেই, বিভিন্ন রোগী বিভিন্ন স্কেলে মেপে ভালো ডাক্তার বলে থাকেন, আজকের এই আয়োজনে সেই গুনগুলো নিয়ে আলোচনা করব

বৈধ ডাক্তার চেনার উপায়ঃ

প্রথমেই জেনে নেই সঠিক ডাক্তার চিনবেন যেভাবে-
বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী যাদের এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রি রয়েছে তাদেরকে শুধু চিকিৎসক বলা হয়। এমবিবিএস, বিডিএস ডিগ্রিধারী ডাক্তারগন বিএমডিসি(বাংলাদেশ মেডিকেল এবং ডেন্টাল কাউন্সিল) থেকে লাইসেন্স প্রাপ্ত। যাদের এই লাইসেন্স নেই তারা বৈধ ডাক্তার নয়। ডাক্তারদের ভিজিটিং কার্ড বা লিফলেটে বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেওয়া থাকে, সেই নম্বর দেখে আপনি জানতে পারবেন উনি বৈধ ডাক্তার কিনা।এ বিষয়ে আমরা অন্য একটি পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করব।

ডাক্তারদের সঠিক ডিগ্রি চেনার উপায়

ডাক্তারের নামের শেষে যুক্ত কোন ডিগ্রি গুলো ভালো এটা অনেকে বুঝেনা, অনেকগুলো ডিগ্রি লাগানো থাকে যার তাকেই ভালো মনে করে এই ধারণা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। শক্তিশালী ও সেরা কিছু ডিগ্রির নাম নিচে দিয়েছি, এগুলো নিয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা করব অন্য একদিন।

গুরুত্বপূর্ণ ডিগ্রিগুলো হল-

  1. এমবিবিএস (থাকতেই হবে)
  2. এফসিপিএস (মেডিসিন /সার্জারী /গাইনি/কার্ডিওলজি /ইউরোলজি/নেফ্রলোজি/হেপাটোলজি ইত্যাদি)
  3. এমডি (মেডিসিন/সার্জারী /গাইনি ইত্যাদি)
  4. এম আরসিপি
  5. ডিপ্লোমা ডিগ্রি (ডিজিও /ডি-কার্ড / ডি-অর্থো/ডিও/ ডিএলও/ডিটিসিডি/ডিএমআরডি/ডিএ ইত্যাদি)
  6. এম আর সি ও জি
  7. এমফিল
  8. এমপিএইচ

ডাক্তারদের বৈশিষ্ট্য দেখে ভালো ডাক্তার চেনার উপায়:

রোগীরা যেসব গুন দেখে ভালো ডাক্তার চেনে সেই গুন গুলো নিম্নে আলোচনা করা হলঃ

১)যে ডাক্তার মনোযোগ দিয়ে কথা শুনেন

রোগীরা এটাই চায় প্রথমত, বর্তমানে ডাক্তাররা রোগীকে কম সময় দেন, এজন্যে এখন অনেক রোগী বাহিরের দেশে চলে যাচ্ছে।

২)যে ডাক্তার শারীরিক পরীক্ষা গুলো করে থাকেন

অনেক ডাক্তার রোগীর কথা শুনে স্টেথোস্কোপ, বিপি মেশিন, হ্যামার, টিউনিং ফর্ক,এবং অন্যান্য আরো বিভিন্ন ইন্সট্রুমেন্ট দিয়ে পরীক্ষা করে থাকেন। সেই ডাক্তারদের কে রোগীরা অনেক পছন্দ করে, এবং সেই ডাক্তারগন ভালো রোগ নির্ণয় ও করতে পারেন।

৩) প্রয়োজনের অতিরিক্ত টেস্ট না দেওয়া

যেসব ডাক্তাররা শারিরীক পরীক্ষা গুলো করেনা, তারা একটু বেশি টেস্ট দিয়ে থাকেন, বাংলাদেশ বেশির ভাগ রোগীর অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়, কম টেস্ট করতে পছন্দ করে রোগীরা। তাই যারা কম টেস্ট দেয় তাদেরে কে অনেকে ভালো মনে করেন। তবে যাদের অর্থনৈতিক সমস্যা নাই, তাদের জন্যে এটা সমস্যা না, অনেক সময় প্রয়োজনীয় টেস্ট ই অনেক হয়ে যায়, টেস্ট কম দিলে রোগ নির্ণয় করতে ডাক্তারের সমস্যা হয়। বিভিন্ন দালালের মাদ্ধমে চিকিৎসা করাতে গেলে এই সমস্যা হয়, তাই দালাল চিন, অপ্রয়োজনীয় টেস্ট থেকে বেচে থাকুন।

৪) অপ্রয়োজনীয় ঔষধ প্রেস্ক্রাইব না করা।

ওনেকের কাছে যে ডাক্তার যত কম ঔষধ লেখেন, সে তত ভালো ডাক্তার। প্রতিটা ঔষধ একধরনের বিষ, যত কম ঔষধ খেয়ে সুস্থ হওয়া যায়, সেটি স্বাস্থ্যের জন্য তত ভালো। তাই যে চিকিৎসক যত কম ঔষধ লিখে ভালো চিকিৎসা দিতে পারেন, সে তত ভালো ডাক্তার।

৫)ডাক্তারের এসিস্ট্যান্ট এর ভালো ব্যাবহার

ডাক্তারের এসিস্ট্যান্ট, অর্থাৎ যে সিরিয়াল দেওয়া, নেওয়া, চেম্বার এ রোগী প্রবেশ করা ইত্যাদি দেখাশুনা করে, তাদের ভালো ব্যাবহার টাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। রোগীরা চাপ দিতে পারে, খারাপ ব্যবহার করতে পারে, সেখানে যে এসিস্ট্যান্ট যত ধৈর্য নিয়ে ভালো ব্যবহার করবে, সেই ডাক্তারের জন্যে সেটি তত ভালো। অনেক এসিস্ট্যান্ট টাকা নিয়ে সিরিয়াল এগিয়ে দেয়, স্বজনপ্রিতি ইত্যাদি করে, ইত্যাদির কারনে রোগীরা অনেক সময় কষ্ট পেয়ে থাকেন। অনেকে সিরিয়াল এর অনিয়ম, ইত্যাদি কারনে ডাক্তার দেখাতে চায়না

৬)রোগীদের প্রাইভেসি বিষয়ে সচেতন ডাক্তার

যেসব ডাক্তার একজন একজন করে রোগী দেখেন, এভং চেম্বার একসাথে অনেক রোগী প্রবেশ করান না, তাদেরকে অনেক রোগী পছন্দ করে থাকেন। অপরদিকে যে ডাক্তার একসাথে কয়েকটি রোগী রুম এ নিয়ে একটা একটা করে দেখেন, একজনে রোগের ইতিহাস আরেকজন শুনতে পায়, ব্যাক্তিগত ভাবে আমার নিজেরও সেটা পছন্দ নিয়। একজন মেয়ে মানুষ চেম্বারে আসল, তার প্রাইভেট কিছু সমস্যা থাকতে পারে, অন্যান্য রোগীরা সেখানে থাকলে উক্ত রোগী ভালোভাবে ইতিহাস দিবেনা, যা রোগ নির্ণয় করতে ব্যাঘাত ঘটায়।

৭) সর্বশেষে বলা যায়, যে রোগী যে ডাক্তারের কাছে ভালো হত, সেই তার কাছে ভালো ডাক্তার।

ভালো ডাক্তার চেনার উপায়ের উপরের ১-৫ নম্বর পয়েন্ট গুলো আপেক্ষিক, একেকজন এর কাছে একেকরকম, এগুলো ছাড়াও আরো অনেক ভালো গুন রয়েছে সেগুলো আপনারা আমাদেরকে জানাতে পারেন।

সকল চিকিৎসকদের অনুরোধ করছি, চলুন আমরা একটু সময় নিয়ে রোগী দেখি, রোগীর কথা শুনি, প্রয়োজনীয় কাউন্সিলিং টুকু করি, প্রয়োজনে রেফার করি, কম খরচে ভালো চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করি।

ধন্যবাদ সাবাইকে, আমার লিখাটি পড়ার জন্যে।

লেখক –
ডাঃ মোঃ নোমান ইসলাম নিরব
এমবিবিএস (রংপুর মেডিকেল কলেজ)

1 thought on “ভালো ডাক্তার চেনার উপায়”

  1. Pingback: ভালো ডাক্তার হওয়ার উপায় — Doctors Gang

Leave a Comment